ভগবদ গীতা (Bhagavad Gita)
কালীপ্রসন্ন সিংহ (Kaliprasanna Singha)মহাভারতের মোট ১৮টি পর্ব রয়েছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ পর্ব অর্থাৎ ভীষ্মপর্বের অন্তর্গত হচ্ছে ভগবদ্ গীতা। ভীষ্মপর্বে মোট ১২৪টি অধ্যায় রয়েছে। সুবিধের জন্য এগুলিকে চারটি পর্বাধ্যায়ে ভাগ করা হয়, যেগুলি হল জম্বুখণ্ডবিনির্মাণ পর্বাধ্যায়, ভূমি পর্বাধ্যায়, ভগবদ্গীতা পর্বাধ্যায় এবং ভীষ্মবধ পর্বাধ্যায়। ভগবদ্গীতা পর্বাধ্যায়ে রয়েছে ১৩তম থেকে ৪২তম অধ্যায়। এরমধ্যে ভগবদ্ গীতা হল ২৫তম অধ্যায় থেকে ৪২তম অধ্যায়, অর্থাৎ মোট আঠারোটি অধ্যায়।
ভগবদ্ গীতা শ্রীকৃষ্ণ এবং অর্জুনের মধ্যে কথোপকথন। কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ শুরু হওয়ার ঠিক আগে অর্জুন দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। যুদ্ধ করা উচিত হবে কি না সেটা সেই মুহূর্তে তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। কোনটা ধর্ম আর কোনটা অধর্ম তা নির্ণয় করতে পারছিলেন না; তার কি কর্তব্য তা নির্ধারণ করতে পারছিলেন না। তখন পুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণ তাকে যে উপদেশ দেন তাই হলো গীতা। গীতা পাঁচহাজার বছর আগে যতখানি প্রাসঙ্গিক ছিল, আজও ঠিক ততটাই প্রাসঙ্গিক, এবং ভবিষ্যতেও সমান প্রাসঙ্গিক থাকবে। তার কারণ, যে দ্বিধার সম্মুখীন অর্জুনকে হতে হয়েছিল, সেই রকমের দ্বিধার সম্মুখীন আমাদেরও জীবনে হতে হয়। ভবিষ্যত প্রজন্মকেও হতে হবে। গীতার অমৃতবাণী তাই চিরকাল মানুষকে পথ দেখাতে থাকবে। প্রসঙ্গক্রমে বলে রাখি যে গীতার প্রথম অধ্যায়ে পটভূমির বিবরণ রয়েছে। আর যে শাশ্বত জ্ঞানের জন্য পাঁচহাজার বছর পরেও গীতা সারা বিশ্বে এতো জনপ্রিয়, তা বিবৃত রয়েছে দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে।
হিন্দুধর্মের একাধিক শাস্ত্রের মধ্যে যদি কোন একটি গ্রন্থকে বেছে নিতে হয়, তা অবশ্যই ভগবদ্ গীতা। গীতাই হিন্দুদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ। বেদ হিন্দুধর্মের ভিত্তি। বেদের শেষ অংশ হল উপনিষদ। উপনিষদ শুধু বেদের শেষ অংশ নয়, বেদের সিদ্ধান্তও বটে। বেদের দর্শন এই উপনিষদেই নিহিত রয়েছে। এই উপনিষদেরই সারাংশ হল গীতা। বেদান্ত দর্শনে
…